মহাত্মা গান্ধীর সংক্ষিপ্ত জীবনী PDF
নমস্কার বন্ধুরা,
আজকে wbpdf.in আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে ভারতের একজন বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী, জাতির জনক, বাপূজি ‘মোহনদাস করমদাস গান্ধী’ এর জীবনী পিডিএফ, যেখানে গান্ধীজীর জন্য, কর্মজীবন, শিক্ষা জীবন, স্বাধীনতা সংগ্রামে তার নেতৃত্ব ইত্যাদি, যা আমরা আজকের প্রতিবেদনে অত্যন্ত সুন্দরভাবে আলোচিত করেছি। তাই এরকম ধরনের আরও পোস্ট পেতে অবশ্যই wbpdf.in এর সঙ্গে যুক্ত থেকে আমাদেরকে আরও উৎসাহিত করুন, যাতে এরকম আরো নিত্য নতুন গুরুত্বপূর্ণ জেনারেল নলেজ এবং স্টাডি মেটেরিয়ালস্ আপনাদের জন্য আমরা এনে দিতে পারি প্রতিনিয়ত।
মহাত্মা গান্ধীর সংক্ষিপ্ত জীবনী
মায়ের দেওয়া মোটা কাপড়
মাথায় তুলে নে রে ভাই,
দিন দুঃখিনী মা যে তোদের
তার বেশি আর সাধ্য নাই।।
বিদেশি পণ্য বর্জন ও দেশীয় পণ্য গ্রহণের মাধ্যমে সমগ্র দেশবাসীর মধ্যে যিনি স্বাধীনতার আলো জ্বালিয়ে তুলেছিলেন, তিনি হলেন জাতির জনক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধী। সত্য ও অহিংসা ছিল যার পরম গুরু।
মহাত্মা গান্ধীর জন্ম ও মৃত্যু তারিখ :
জন্মস্থান – পোরবন্দর, গুজরাট, ব্রিটিশ ইন্ডিয়া
জন্ম – 2 অক্টোবর, 1869
মৃত্যু – 30 জানুয়ারি, 1948
অন্য নাম – মহাত্মা গান্ধী, জাতির জনক, গান্ধীজী, বাপুজী ইত্যাদি
জন্ম:- বাপুজী অর্থাৎ জাতির জনক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী 2রা অক্টোবর 1869 সালে, তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্গত কাথিয়াবাড় প্রদেশের পোরবন্দরের এক জৈনিক বেনিয়া হিন্দু তার জন্ম হয়। পিতা করমচাঁদ উত্তরচাঁদ গান্ধী এক প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রনেতা ছিলেন, মাতা পুওলিবাই ছিলেন হিন্দু শাস্ত্রমতে একজন নিষ্ঠাবান মহিলা। গান্ধীজী অর্থাৎ বাপুজি মাত্র 13 বছর বয়সে উনারই সমবয়সী এক মহিলা কস্তুরবা দেবীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং কিছু বছরে মধ্যে এই 4 সন্তানের পিতাও হয়ে যান।
শিক্ষাজীবন :- গান্ধী ছিলেন এক অতি ভদ্র জৈনিক হিন্দু পরিবারের সন্তান। তাই শৈশব থেকেই তিনি তার পিতার কাছ থেকে সত্য, অহিংসা এবং সাহসের পাশাপাশি মাতার কাছে পেয়েছেন কঠোর ব্রত পালনের শিক্ষা। কাথিয়াবার থেকে 18 বছর বয়সে তিনি বাল্যজীবন সম্পন্ন করে ম্যাট্রিক পাস করেন। তারপর গান্ধীজীর বড় ভাইয়ের ইচ্ছার কারণে ব্যারিস্টারি পড়তে ডিলেট যেতে চাইলে গান্ধীজিকে 1888 বিলাতের উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়। কয়েক বছর পর দীর্ঘ পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে 1891 খ্রিস্টাব্দে তিনি ব্যারিস্টারি ডিগ্রী নিয়ে দেশে ফিরে আছেন।।
কর্মজীবন:- ব্যারিস্টারি শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত হয়ে বিলাক থেকে দেশে ফিরে এসে তিনি দেশে আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। এই কাজে কর্মরত থাকাকালীন কয়েক বছর পর Abdullah & Son’s এর আইনজীবী হিসেবে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের বেরিয়ে পড়েন। যেটা এনে দিয়েছিল বাপুজী জীবনে একটি নাটকীয় পরিবর্তন। আফ্রিকায় গিয়ে কর্মরত থাকাকালীন তিনি ভারতীয় এবং কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি সাধারণত বৈষম্যের শিকার হন, এইখানেই ভারতীয়দের অধিকার সচেতন করে গড়ে তুলতে 1894 খ্রিস্টাব্দে তিনি নাটাল ইন্ডিয়ান কংগ্রেস নামক একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। এবং সেই সঙ্গে সেখানকার ভারতীয়দের নিয়ে রাজনৈতিক সংঘবদ্ধ হয়ে কৃষ্ণাঙ্গ এবং শ্বেতাঙ্গ নামক একটি আন্দোলন তিনি গড়ে তোলেন। তারপর 1915 খ্রিস্টাব্দের 9ই জানুয়ারি ভারতবর্ষের মাটিতে তিনি প্রত্যাগমন করে তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন।
চম্পারণ ও খেদা সত্যাগ্রহ:- 1918 খ্রিস্টাব্দে চম্পারন বিক্ষোভ এবং খেদা সত্যাগ্রহ আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার প্রসৃত জমিদারদের কৃষক সমাজের প্রতি বর্বর রচিত অত্যাচার ও খাজনা আদায়ের বিরুদ্ধে সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেলের সহযোগে একটি আন্দোলন শুরু করেন। ফলস্বরূপ সেখানে খাজনা আদায় বন্ধ এবং বন্দী কৃষকদের মুক্তি দেওয়া হয়।
অসহযোগ আন্দোলনের কারণ ও ফলাফল:- গান্ধীজী বিশ্বাসী ছিলেন সত্য এবং শান্তিতে। তাই গান্ধীজির মতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র হওয়া প্রয়োজন অসহযোগ এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ করা। পাঞ্জাবি জালিয়ানওয়ালাবাগে 1919 খ্রিস্টাব্দে ভারতীয়দের ওপর যে বরবরচিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করেন এবং ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে গণপক্ষ ঘোষণা করেন। স্বরাজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে তিনি 1921 খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নির্বাহী হন, এছাড়াও এর জন্য খাদি সুতো কাটার মাধ্যমে বিদেশি পণ্য বর্জন এবং দেশি পণ্য গ্রহণের জন্য ব্রিটিশ ভারতীয়দের কাছে আহবান জানান। এই সময় অসহযোগ আন্দোলন বেশ অনেকটাই জনপ্রিয়তা ও সাফল্য অর্জন করেছিল। কিন্তু কিছুদিনের পর অপ্রত্যাশিতভাবে উত্তরপ্রদেশের চওড়াচড়িতে ঘটে যাওয়া এক সংঘর্ষে এই আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটে।
গান্ধীজীর সত্যাগ্রহ আন্দোলন:- গান্ধীজী বিংশ শতাব্দীর 20 এর দশকে নিজেকে নীরব রাখার মাধ্যমে স্বরাজ পার্টি ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে বাধা দূর করার চেষ্টা করেন। 1928 খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ভারতকে ডমিনিয়ানের মর্যাদা দেবার দাবি জানিয়ে পূর্ণ স্বাধীনতার লক্ষ্যে তিনি সাদা চামড়ার শাসকদের ওপর হুমকি দেন। 1929 খ্রিস্টাব্দের 31 ডিসেম্বর দেশীয় জাতীয় পতাকা উন্মোচন এবং 1930 খ্রিস্টাব্দের 26 জানুয়ারি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এই দিনটিকে প্রথম স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করে। এ সময় প্রাত্যহিক অত্যাবশকীয় পণ্য লবণ এর ওপর কর আরোপের বিরুদ্ধে লবণ সত্যাগ্রহ নামক একটি কুচকাওয়াজ ঘোষণা করেন গান্ধিজি। আত্মনির্ভর হবে লবণ তৈরির উদ্দেশ্যে স্বয়ং নিজেই এলাহাবাদ থেকে ডান্ডি পর্যন্ত 400 কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে তিনি যান। এই আন্দোলন সফল হলে ব্রিটিশ সরকার প্রায় 60,000 হাজার ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করে। 1941 খ্রিস্টাব্দে গান্ধী ডারউইন এক এর মাধ্যমে অসহযোগ আন্দোলন বন্ধ করার বিনিময়ে তিনি বন্দী ভারতীয়দের মুক্তি আদায় করেন এবং স্বাধীনতার পথ আরো সু-প্রশস্ত করেন।
গান্ধীজীর শিক্ষা নীতি:- গান্ধীজীর লক্ষ্যই ছিল সত্যের পথে শিক্ষাকে অবৈতনিক সর্বসাধারণের জন্য প্রতিষ্ঠিত করা। তিনি তিনি একজন শিশু কেন্দ্রিক শিক্ষার পক্ষপাতী ব্যক্তি, ভারতবর্ষের বুনিয়াদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠায় ছিল তার অমর এক কৃতি।
সম্মাননা:- ভারতের এক মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী, রাজনৈতিক নেতা এবং আধ্যাত্মিক চেতনার অধিকারী শ্রী মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী খ্যাতি শুধু ভারতের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল তা নয় বরং তা সমগ্র বিশ্বজুড়ে তিনি মহাত্মা গান্ধী নামে পরিচিত হয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন সমগ্র ভারতবাসীর জাতির জনক, তাই ভারত সরকারের তরফ থেকে 2রা অক্টোবর , গান্ধীজীর জন্ম দিনটিকে গান্ধী জয়ন্তী হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেন। আবার কয়েক দশক পর 2007 সালের 15 জুন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনটিকে আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস হিসেবে পালন করা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়াও এখন বর্তমানে ভারতীয় সংসদ ভবনেও গান্ধীজীর প্রতিমূর্তি স্থাপন করা রয়েছে।
জীবনবসান:- স্বাধীনতার প্রতি কঠোর সংগ্রাম করা গান্ধীজি কিন্তু পাননি স্বাধীনতার এই চরম স্বাদ বেশিদিন। 1948 সালের 30 জানুয়ারি দিল্লিতে এক অনুষ্ঠান ভবনের প্রার্থনা সভায় নাথুরাম গডসের গুলিতে তিনি সেখানেই নিহত হন।
More Pdf | Download Link |
বিভিন্ন ব্যাক্তির আত্মজীবনী মূলক বই PDF | Click Here |